ঋতুক্ষরণ...গুচ্ছকবিতা
ঋতুক্ষরণ ....(প্রকাশিত, পূর্বমেঘ, ফেব্রুয়ারি মার্চ সংখ্যা, 2016 )
.........................
এক
বসন্তের চলনে একটিই রাগ.... পরকীয়া/
মুহূর্ত ধুয়ে, নুয়ে জলপান/
ধুলো গেলা, শ্লেষ ঢেলে ঢেলে স্নান/
এ তোমার ইচ্ছে লোপাট, বেনামে নিজেকে খোঁজা /
কালবৈশাখী তে তোমার বড়ো ভয় ....../
দুই
........................
তুমি ভাবো এ তোমার বৈরাগ্য, বিষাদ হীনতা/
ছবির পাহাড়ে এ তোমার আকুল মিথ্যে/
দগ্ধ দিনে মাঠের শেষে যে কুটির/
তার আশপাশের সব জল শুকিয়ে আছে/
এক নবীন কন্যা আসছে ধীরে.... ধীরে/
তার অবাধ চরণ মেঘলালিত /
বৈরাগ্য ধোবে না সে
নিরন্তর স্বপ্নবাহিত হয়ে.... হয়ে /
তার হৃদয় আজ অলকানন্দা ....../
তিন
............................
দীর্ঘ হয়ে জ্বলতে থাকা এক গ্রীষ্মতরুণী/
ক্লান্ত হওয়ার জন্য এ জন্ম তার ছিল না/
পিচের রাস্তায় বিন্দু বিন্দু হয়ে ঝরে
পড়ে তার খই ঘাম/
অসময়ের পদাবলীই তার অভ্যাস/
এতটাই ব্যক্তিগত হয়ে উঠছে তার যাপন/
দূর, বহুদূর পর্যন্ত ফুটে নেই একটিও শান্ত, লঘু ঝড়/
চার
.............
বৈশাখ কে পরিতৃপ্ত করে গেছে/
মিথ্যে, স্থায়ী নিতান্তই ভেষজ এক বসন্তবাঁধ /
জলাধারে এতো জল! /
ডুবে যায় অনুরাগী জমিন /
একটুখানি, আধচরণ বেলীগন্ধ/
দূষনের মতো শিরায় এঁকে দিয়েছে/
নিরাভরণ আকাশ, গোত্রহীন মেঘবালিকার শন চুল/
এখন আর একটুও সময় নেই/
বিদ্যুত পরিবাহী সব তার ছিঁড়ে আছে নরম কালবৈশাখীতে .../
থাক, থাক এই অন্ধকার /
অন্ধকারে কতদিন দেখিনি দুজন দুজনকে /
পাঁচ
...........................
বৈশাখ নিজেকে ভাবে সম্রাটের মতো/
মনে করে এই গন্ধদহন, উষ্ণ কাঁচা শাল্মলী/
এই রঙ পুড়ে যাওয়া ক্লান্ত চোখ, কেবলি তার /
শাণিত অধিকার তবে থাক তোমারি রাজা ! /
আমি তো বহনে, গহনে ছুঁয়ে থাকা গ্রীষ্ম রাত.../
ভাবতে পারো দেবী ! সূর্যমন্দিরে আজন্ম সহবাস/
জেনে নিও, মেনে নিও, /
শুধু কবিতার জন্য এই গমনাগমন ..../
ছয়
............................
বের হও, বের হও
এই শরীর সরোবর ছেড়ে
হংসপ্রলাপ, অবগুণ্ঠিত কারণবারি
ছাড়ো ছাড়ো সবই .....
রোদ আর রোদ,
রোদে ঝলসে নাও গতজন্মের ঋতু......ঋতুক্ষরণ..
0 মন্তব্য(গুলি):