সাক্ষাৎকার, কবি রণজিৎ দাসের সঙ্গে

১২:২৪ PM চিরশ্রী দেবনাথ 0 Comments

উনিশে মে ভাষা শহীদ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠান, "মাতৃভাষা প্রণাম দিবস, দুইহাজার সতেরো " তে বিশেষ অতিথি ছিলেন কবি রণজিৎ দাস। অনুষ্ঠান শেষে, তার একটি সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকার। 
কথোপকথনে চিরশ্রী দেবনাথ।

যিনি ভাবেন, "সমাজের কাছে কবির দায়বদ্ধতা একটিই ...ভাল কবিতা লেখা "।



প্রশ্ন :          কবি রণজিৎ দাস কেমন আছেন?

উত্তর :    ভালো আছি।

  প্রশ্ন :                আপনি যে সময় থেকে কবিতা লিখতে শুরু করেছিলেন এবং এখন পর্যন্ত লিখছেন, তার সঙ্গে, একদম এসময়ে যারা কবিতা লিখছেন, তাদের কবিতার ভাষা বা আঙ্গিকের কি কোন সুস্পষ্ট ফারাক আছে অথবা সেই ভাষাটি কি বদলেছে?

উত্তর :      কবিতার ভাষা খুব প্রচ্ছন্নভাবে প্রতিটি প্রজন্মেই পাল্টায়, কারণ পরিবর্তনই শিল্পের মৌলিকতার ধর্ম, সেই হিসেবে আমার সময়ের কবিতার ভাষা থেকে বর্তমান প্রজন্মের কবিতার ভাষায় যথেষ্ট পরিবর্তন ঘটেছে।

প্রশ্ন :  আপনার কবিতা আমরা ভালোবাসি, আপনি যখন কবিতা লিখেন তখন ব্যক্তি রণজিৎ দাস এবং কবি রণজিৎ দাস কি এক হয়ে যান না আলাদা আলাদা? 

উত্তর :  আমি মনে করি, কাব্য রচনার সময় কবির ব্যক্তিসত্ত্বা ও কবিসত্ত্বায় কোন বিরোধ থাকে না, আসলে এ প্রশ্নটিই গোলমেলে, কারণ, কবিসত্ত্বা ও ব্যাক্তিসত্ত্বা যদি আলাদা হয়, তাহলে একটি সত্ত্বাতে কিছুটা ফাঁকি মিশে আছে বলে ধরে নিতে পারি। কবির ব্যাক্তিসত্ত্বার

অন্তর্গত হৃদয়টিই হলো তার কবি সত্ত্বা।


প্রশ্ন : কয়েকটি সংঘবদ্ধ লাইনকে আপনি কখন কবিতা বলবেন?

উত্তর : সেই লাইনগুলোতে যদি কবিতার ক্ল্যাসিক গুণাবলী বর্তায় তাহলেই আমি সেই স্তবককে কবিতা বলি। ক্ল্যাসিক গুণাবলী বলতে সংক্ষেপে বলা যায় কাব্যভাষার সৌন্দর্য কল্পনার চমৎকারিত্ব, গভীর হৃদয়বত্তা এবং কবির জীবনদৃষ্টির মৌলিকতা।

প্রশ্ন : সময়কে ধরে রাখার দায়বদ্ধতা কি কবির আছে?

উত্তর : সমাজের কাছে কবির দায়বদ্ধতা একটিই ..."ভালো কবিতা লেখা "। ভালো কবিতায় সময়ের ক্ষতচিন্হ পড়বেই। সুতরাং আলাদাভাবে সময়কে ধরে রাখার আরোপিত চেতনা কবির প্রয়োজন নেই।

প্রশ্ন : আপনার লেখা আপনার প্রিয় কবিতার দুটো লাইন...

উত্তর : হাসি, নীরব রইলেন।

প্রশ্ন : ত্রিপুরার বাংলা কবিতার চর্চা এবং সার্থকতা সম্পর্কে আপনি কি বলবেন?

উত্তর : ত্রিপুরায় বাংলা কবিতার চর্চার ঐতিহ্য দীর্ঘদিনের এবং সেই চর্চার বৈচিত্র্য ও উৎকর্ষ অনেক। সুতরাং বাংলা কবিতার সামগ্রিক প্রবাহের ভিতরে ত্রিপুরার কবিদের কাব্যচর্চা নিশ্চয়ই সমৃদ্ধির ফসল যোগ করে চলেছে। 

প্রশ্ন : রাজনীতি, শিক্ষাঙ্গন, সমাজ, অর্থনীতি, ধর্মাচরণ এইসমস্ত কিছু নিয়ে আমাদের দেশ এখন কেমন আছে? কবির অনুভব ...

উত্তর : মানুষের ইতিহাস আমাদের সেই শিক্ষাই দেয় যে যেকোন একটি যুগে একটি রাষ্ট্র এবং তার সামাজিক পরিস্থিতি কখনোই সার্বিকভাবে ভালো থাকে না, ভালো এবং মন্দের প্রবল দ্বৈরথ চলতেই থাকে, সেই হিসেবে বর্তমান সময়েও ভারতের সামাজিক পরিস্থিতি মোটেই সার্বিকভাবে আশাব্যঞ্জক না।

প্রশ্ন : কবি কি শুধুই বিমূর্ত কিছু লাইনের রচয়িতা হবেন না বর্তমানকে বিষয় হিসেবে নিয়ে, সময়ের ভাষ্যকার হবেন?

উত্তর : কবিতার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে জীবন রহস্যের উদঘাটন। এই দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে সময়ের ভাষ্যকার কথাটির আলাদা গুরুত্ব থাকে না।

প্রশ্ন : ত্রিপুরা এসে কেমন লাগলো?

উত্তর : খুব ভালো লাগলো। 

0 মন্তব্য(গুলি):