২০১৯

১:৫২ PM চিরশ্রী দেবনাথ 0 Comments

বাদামী খোলসে "২০১৯ "
..................................

ক্যালেন্ডারের তারিখ, ছুটির আমেজ, পিকনিকের গাড়ি, কাঁটাতার না মানা পরিযায়ী পাখির দল বলে দিচ্ছে শেষ হয়ে যাচ্ছে ২০১৯, 
উল্টে পাল্টে দেখে নিই, ঝড়ের মতো গতিময় এই বছরটিকে। 
যে মানুষ কখনও রাজনীতি করেনি, রাজনীতির ঘোর প্যাঁচ কিছুই বুঝতে চেষ্টা করেনি, যাদের কাছে ভারতের সংবিধান একটি দুর্বোধ্য গ্রন্থ মাত্র, সেই ভারতের হাজার হাজার মানুষ আজ পৃথিবীর বৃহত্তম সংবিধানটি নিয়ে একটু মাথা ঘামিয়েছেন, বাধ্য হয়ে শুনতে চেয়েছেন, অন্ততঃ কিছু একটা জানতে চেয়েছেন। ডিজিটাল যুগের ছেলেমেয়েরা শুধু নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত এই ধারণা থেকে অন্ততঃ মুক্ত হতে পেরেছি আমরা, দেখতে দেখতে শুনতে শুনতে ২০১৯ পেরিয়ে এসেছি,  ২০২০ কি হবে জানা নেই, অথচ একটি গরম আঁচ অনুভব করতে পাচ্ছি। 
দুই একটি দশক ধরে মূলত কয়েকটি ঘটনারই পুনরাবৃত্তি চলতে থাকে, মাঝে মাঝে তাতে শান দেয় তাৎক্ষণিক কিন্তু আসলে তাৎক্ষণিক নয় তেমন কিছু ঘটনা। বছরের শুরুতেই আমরা বহুকথিত একটি কঠিন সমস্যার কালো ছায়া দেখেছি, যার সঙ্গে আমাদের অস্তিত্ব জড়িত। সমস্যাটির নাম জল। ক্রমেই কমে যাচ্ছে ভূগর্ভস্থ জল। শুকিয়ে যাচ্ছে ভারতের বড় বড় নদীগুলোর জলধারা। এক অভাবনীয় জলসঙ্কটের মুখোমুখি হয়েছে ভারতের অন্যতম মেট্রোপলিটন সিটি চেন্নাই। আশংকা করা হচ্ছে অন্যান্য বড় বড় শহরগুলোও সম্মুখীন হবে জল সমস্যার। চারশ টাকা, পাঁচশো টাকা লিটার হয়েছিল জলের দাম সেখানে, অন্য রাজ্য  থেকে আমদানি করতে হয়েছে ট্রেনে করে । বিশাল ভারতবর্ষের খাদ্য শস্যের একটা বড় অংশ আসে পাঞ্জাব থেকে। সেই পাঞ্জাবের ভূগর্ভস্থ জলের পরিমান অনেকটাই নীচে নেমে গেছে। সব মিলিয়ে ভারতবর্ষ অচিরেই জল নিয়ে বিরাট সমস্যায় পড়বে বা পড়ে গেছেই বলা যায় । 
সেইসঙ্গে গোটা পৃথিবী সাক্ষী থাকল পৃথিবীর ফুসফুস বলে পরিচিত আমাজনের হাজার হাজার একর বনভূমি, পশুপাখি পুড়ে যাওয়ার এক নারকীয় দাবানলে। ২০১৯ বলে দিয়ে গেলো পরিবেশ নিয়ে ভাবো সারা পৃথিবী, সারিয়ে তোলো তার ক্রমবর্ধমান ক্যান্সার।
 সামজিক, রাজনৈতিক,  অর্থনৈতিক ইস্যু নিয়ে টালমাটাল ২০১৯ এর ভারত। 
আমাদের দেশে অবশেষে তিন তালাক নিষিদ্ধ হলো। ভালো জিনিসকে স্বাগত জানালাম আমরা। কিছু বিরোধ এবং পাল্টা যুক্তি তর্ক চললেও বলা যেতে পারে এটা অবশ্যই আলোর ঝলক।
আবারও ভারতীয় সংসদে চলল দীর্ঘ বিতর্ক, 
  স্বাধীনতা লাভের অনেকগুলো দশক পেরিয়ে কাশ্মীর থেকে অবশেষে উঠিয়ে নেওয়া হলো ৩৭০ ধারা। একটি দেশে দীর্ঘদিন ধরে যখন কোন নিয়ম চলতে থাকে তখন হঠাৎ করে সেই নিয়ম ভঙ্গ হলে লোকে ভয় পেয়ে যায়। দীর্ঘদিন কাশ্মীরবাসী ইন্টারনেট পরিষেবা পাননি। কাশ্মীরের বাইরের মানুষ জানতে পারেনি ঠিক কি ঘটছে কাশ্মীরে। তবে আগামীদিনগুলোতে ভারতের অন্যান্য রাজ্য গুলোর মতোই কাশ্মীর একটি স্বাভাবিক  রাজ্য হিসেবে তার অপরিসীম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের হীরকদ্যুতি ছড়িয়ে সবাইকে আরোও বেশি আকর্ষণ করুক তাই চাই। 
৩৭০ ধারা যদি একটি দেয়াল হয় তবে সব অর্থেই তা ভেঙে ফেলা হোক, বিচ্ছিন্নতাবাদ এবং সন্ত্রাসবাদ থেকে বেরিয়ে আসুক আমার দেশ।

বহু বিতর্কিত আসাম এন আর সি এর চুরান্ত তালিকা প্রকাশিত হয়েছে এই বছরের ৩১ শে আগস্ট।  নাগরিকপঞ্জি থেকে বাদ পড়লেন উনিশ লক্ষ মানুষ। দেশহারা মানুষদের নিয়ে সারা দেশ এখন উদ্বিগ্ন, বিচলিত, আন্দোলনতৎপর, পক্ষে বিপক্ষে আইনি বেড়াজালের চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে, তো চলছেই। মানুষ স্পষ্ট ভাষায় নিজেদের মতামত জানাচ্ছেন, জানাতে সাহস করছেন, এটাই বোধহয় প্রকৃত ভারত আত্মা। একসময় ভয় থেকে বেরিয়ে আসে জনগন, নিজেদের কথা বলে। 
একশ তিরিশ কোটির স্বপ্ন নিয়ে ২২ শে জুলাই পৃথিবীর চতুর্থ দেশ হিসেবে চাঁদের মাটিতে এবং পৃথিবীর প্রথম দেশ হিসেবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুর উদ্দেশ্যে শ্রী হরিকোটা থেকে রওনা দিয়েছিল ইসরোর তৈরি চন্দ্রযান-২। ৯৭৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ভারতের এই প্রকল্প শেষপর্যন্ত পুরোপুরি সাফল্যের  মুখ দেখতে পায়নি। সেপ্টেম্বরে চাঁদের মাটিতে সঠিক অবতরণ হয়নি ল্যান্ডার বিক্রমের । কিন্তু চন্দ্রযান -২ উৎক্ষেপণ নিয়ে জনসাধারণ বিশেষত ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে দেখা গিয়েছে প্রবল এক মহাকাশ উন্মাদনা। ডিজিটাল যুগের ছেলেমেয়েরা সমস্ত খবর নিয়ে ছিলেন আপ টু ডেট। গ্রামের স্কুল থেকে শহরের স্কুল সবজায়গায় আলোচিত হয়েছে দুই হাজার উনিশের  চন্দ্রাভিযান। চন্দ্রযান -২ এর এই সাফল্যটিও কিন্তু কম উল্লেখযোগ্য নয়। 
একটি মন খারাপ করা খবরের পাশেই আসে ভালো খবর। আমরা যেমন পেলাম অর্থনীতিতে অভিজিৎ বিনায়ক বন্দোপাধ্যায়ের যৌথভাবে নোবেল প্রাপ্তি। 
২০১৫ সালে বিশ্বব্যাংক ঘোষণা করেছিল, ১৯৯০ এ চরম দারিদ্রে বাস করেছে ১৭৫ কোটি মানুষ, ২০১৫ তে তাদের সংখ্যা ৭০.২১ কোটি। এই অতি দরিদ্রদের এক বড় অংশ প্রায় অর্ধেকের বসবাস পৃথিবীর মাত্র দুটি অঞ্চলে নিম্ন সাহারা এবং দক্ষিণ এশিয়ায়। কয়েক দশক আগেও বড় অর্থনীতিবিদরা এইসব ছোটখাটো কোন দেশে কি হচ্ছে তা নিয়ে মাথা ঘামাতেন না, তারা জানতে চাইতেন " বিগ পিকচার ",তারপর উন্নয়ন সম্পর্কে নানান তত্ত্ব উঠে আসত এইসব ম্যাক্রো অর্থনীতিবিদদের কাছ থেকে। ২০১৯ এ অর্থনীতিতে নোবেল পেলেন যে ত্রয়ী, তার মধ্যে রয়েছেন  অভিজিৎ বিনায়ক বন্দোপাধ্যায়, ওনার ফরাসী পত্নী এস্থার দুফলো এবং মাইকেল ক্রেমার । উন্নয়ন ও দারিদ্রমোচনের বড় প্রশ্নগুলোকে তাঁরা ছোট ছোট ভাগ করে সারা পৃথিবীতে ঘুরে বেরিয়েছেন, এইসব ভ্রমণবৃত্তান্ত ও গরীবমানুষের জীবনের নানা ঘটনা নিয়ে অভিজিৎ ও দুফলো লিখেছিলেন তাদের বিখ্যাত বই, "পুওর ইকোনমিক্স ",২০১১ তে, তারো আগে ২০০৩ এ তারা গড়ে তুলেছিলেন, "আবদুল লতিফ জামিল পভার্টি অ্যাকশন ল্যাব, যেখানে আপাতত চারশো অর্থনীতিবিদ কর্মরত। এই অধ্যাপক দম্পতির নতুন বই " গুড ইকনমিকস ফর হার্ড টাইমস্ ",বর্তমান বিশ্বের অর্থনৈতিক মন্দা সম্পর্কে তারা কিছু বিষয় তুলে ধরেছেন, যেখানে ভারত সম্পর্কে লেখকদের মন্তব্য, ভারতের মতো দেশের পক্ষে যা কাম্য তা হলো, "সর্বজনীন ন্যূনতম আয় প্রকল্প "বা " Universal Ultra Basic Income "। 
যাই হোক নোবেলজয়ীদের মূল কাজ সম্পর্কে আমাদের মধ্যে বেশীরভাগই সঠিকভাবে অবগত নই। আমরা ভাসলাম আমাদের আবেগ নিয়ে, বাঙালিয়ানা নিয়ে, তার খাওয়া, থাকা, হবি এমনকি ওনাদের ব্যক্তিগত  জীবন নিয়ে রসালো আলোচনা করে। কোনো কোনো বছর আমাদের হাতে যখন এরকম একটি মূল্যবান, গর্ব করার মতো বিষয় উপহার দেয় তখন একটু সংযত আচরণ হলে হয়তো মূল বিষয়টি সম্পর্কে আলোকপাত হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়। 

সত্তর বছর ধরে এবং তারও কয়েক শতাব্দী আগে থেকে চলে আসা ভারতের অন্যতম ঐতিহাসিক এবং বিতর্কিত অযোধ্যা মামলার রায়ও পেলাম এই বছরে। সুপ্রীম কোর্টের দেওয়া এই রায় নিয়েও বহু বিতর্ক হচ্ছে, পক্ষে বিপক্ষে সওয়াল করছেন সাধারণ মানুষ। তবুও ভারতবর্ষের আর কোন মামলা নিয়ে বোধহয় খবরের কাগজ থেকে টি ভি চ্যানেল এতো রসদ পায়নি। ভারতবর্ষের ধর্মনিরপেক্ষতা, সকল ধর্মের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান, বিশ্বের কাছে ভারতের ভাবমূর্তি প্রশ্ন গুলোর সঙ্গে দিনের পর দিন জড়িয়ে থেকেছে অযোধ্যার রাম মন্দির বাবরি মসজিদ প্রসঙ্গ। 
 বলা যায়, ভারতবর্ষের মানুষ ক্ষোভ বিক্ষোভ, সাধুবাদ সমস্তকিছু দিয়েই সুপ্রীম কোর্টের দেওয়া  রায়কে শান্তিপূর্ণভাবেই মেনে নিয়েছেন। 
বছরের শেষে নিষ্ঠুরতম ধর্ষণকান্ড সমগ্র দেশকে স্তম্ভিত করে কাঁদিয়ে দিয়ে গেলো। এরকম ধর্ষণ এবং হত্যা যে এর আগে ঘটেনি তা নয় তবুও ব্যাঙ্গালোররের তরুণী পশু চিকিৎসককে ধর্ষণ করে তারপর জীবন্ত পুড়িয়ে দেওয়া প্রমাণ করলো সমাজের মূল স্রোত থেকে বিচ্ছিন্ন  সম্পূর্ণ আলাদা কিছু প্রাণী তৈরি হয়েছে যাদের মধ্যে নৃশংস পাশবিক প্রবৃত্তি ছাড়া আর কিছু নেই। আর উন্নাও এর সেই মেয়েটি যে আগুন গায়ে নিয়ে দৌড়ে গেছে সে বুঝিয়ে গেছে ভারতের হৃদয় আসলে জ্বলছে ক্রমাগত। এই দহন থেকে কবে ভারতীয় নারী মুক্তি পাবে জানা নেই। 
আসছে ২০২০, আহা ভারত যদি ধর্ষণমুক্ত একটি দেশ হতো!  
ডিসেম্বরের কনকনে ঠান্ডায় সারা ভারত শীতের আমেজ নিতে চাইলেও, ঠিক যেন কোথাও একটি অবিশ্বাসের বাতাবরণ। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে বিক্ষোভ, এন আর সি, এন পি আর, ক্যা, এইসব নিয়ে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলনমুখর হয়ে ওঠা হঠাৎ করেই যেন চেনা ছকটাকে বদলে দিচ্ছে। 
এদিকে সমীক্ষা বলছে ভারতে চলছে অর্থনৈতিক মন্দা, বেকারত্ব বেড়েছে।  অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে উঠতে ভারতকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছে ইন্টারন্যাশনাল মনিটরি ফান্ড (আইএমএফ)। এজন্য বর্তমান সরকারকে কয়েকটি নীতি বদল এবং সংশোধনের পরামর্শ দিয়েছে আইএমএফ। বৃহৎ অর্থনীতির দেশ ভারতে এমন অর্থনৈতিক মন্দায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। আইএমএফ প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদনে অর্থনৈতিক মন্দার কারণ হিসেবে, ভারতের বাজারে পণ্য বিক্রির পরিমাণ হ্রাস, পুঁজি বিনিয়োগ কমে যাওয়া ও রাজস্বের পরিমাণ হ্রাসকে দায়ী করা হয়েছে।
বিশ্বের ৯০ শতাংশ দেশেই ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে বৃদ্ধির হার আরও নিম্নমুখী হবে। ভারতে সেই হার হবে আরও বেশি নিম্নগতির, এরকমটাই আশংকা।
ভারত তার অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে উঠুক, সাময়িক রাজনৈতিক অস্থিরতা কাটিয়ে ওঠে দেশের মূল সমস্যাগুলোর দিকে সবাই আরোও যত্নবান হয়ে উঠুক। আর সমস্ত কিছু ছাপিয়ে যে সমস্যাটির করাল থাবা আমাদের জীবনকে বিপর্যস্ত করে তুলছে তা হলো পরিবেশ।  ক্রমাগত বৃক্ষসংহার মরুভূমির হাতছানি ছাড়া আর কিছুই নয়। তার মধ্যে একটি সবুজ খবর হলো, পরিকল্পনা করা হয়েছে, হরিয়ানার পানিপথ থেকে গুজরাটের পোরবন্দর পর্যন্ত ১৪০০ কি মি দীর্ঘ, ৫ কি মি প্রস্থ বিশিষ্ট এক গ্রীণ ওয়াল তৈরি করার, যেখানে লাগানো হবে হাজার হাজার গাছ, এই রিফরেস্টেশনের মূল উদ্দেশ্য অদূর ভবিষ্যতে এই অঞ্চলটিকে মরুভূমি হওয়া থেকে রক্ষা করা, কারণ ইসরোর বিজ্ঞানীগন এমন একটি আশংকার কথাই শুনিয়েছেন।
একটি ছোট্ট  সবুজ ফুসফুসের জন্ম মানেই পরিবেশকে ফিরে পেতে সামান্য পাপ সংশোধন, আশার কিরণ। 
প্রতিবছরই আমরা হারাই কিছু মানুষকে, যাদের বৈদগ্ধ্য আমাদের সমৃদ্ধ করেছে বহুকাল। যুগিয়েছে প্রাণের আনন্দ, বিষাদের সময় আমাদের হৃদয়ে তুলে দিয়েছে সরস, প্রাণবন্ত কিংবা চিরন্তন কাব্য পংক্তি। বহু খ্যাতনামা মানুষকে হারিয়েছি, বছর শেষে আমি দুজনের কথা বলব, প্রথম জনের কথা বলতে গেলে বলব তিনি হয়ত ভারতের নাগরিক নন, কিন্তু কবির কি সত্যিই কোন দেশ থাকে? কবিতা তো দেশ কালকে ছাপিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে সর্বত্র। 
তিনি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি আল মাহমুদ, ২০১৯ এর শুরুতেই ১৫ ফেব্রুয়ারি মাসেই আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন "সোনালী কাবিন "এর কবি আল মাহমুদ। তাঁর লেখা থেকে,

 "প্রেম কবে নিয়েছিল ধর্ম কিংবা সংঘের শরণ
মরণের পরে শুধু ফিরে আসে কবরের ঘাস
যতক্ষণ ধরো এই তাম্রবর্ণ অঙ্গের গড়ন
তারপর কিছু নেই, তারপর হাসে ইতিহাস৷"

আর ৭ নভেম্বর বাংলা সাহিত্যের বিশিষ্ট লেখিকা 
নবনীতা দেবসেন, তার "ভাল বাসা ", ছেড়ে আনন্দধামে নতুন ঠিকানায় পাড়ি দিয়েছেন, অফুরন্ত প্রাণশক্তির অধিকারী সদা হাস্যমুখ এই লেখিকা আমাদের জন্য রেখে গেছেন বিরাট এক সাহিত্যসম্ভার। তিনি অনন্য সব রূপকথার গল্প লিখেছেন, যাতে আছে নিত্যনতুন কল্পনা, শিশুমনকে ভাবিয়ে তোলার,  জাগিয়ে তোলার স্বপ্নিল পৃথিবী । ২০১৯ এর এই শেষ সপ্তাহে এসে মনে হচ্ছে, আমাদের দেশের মানুষের মনে যেন সেই সরল শিশুভাবটি জেগে ওঠে, শিশুর মতো সহজভাবে বুঝতে পারে মানুষ মানুষের সমস্যা, ভারতকে কি তাহলে রূপকথার সেই দেশ বানানো যাবে, সুখী সুখী মানুষে ভরা, ঠিক যেন "আমরা সবাই রাজা, আমাদের এই  রাজার রাজত্বে,
নইলে মোদের রাজার সনে মিলব কি স্বত্ত্বে "। 

( প্রকাশিত, "স্যন্দন ")
@ চিরশ্রী দেবনাথ।

0 মন্তব্য(গুলি):