চৈত্রদিন
একটি অপরিমেয় শূন্যতায় কাটছে চৈত্রের দ্বিপ্রহর গুলো। এখন তো জমজমাট হাট বাজার থাকার কথা। বছর শেষে
রাস্তায় বেরিয়ে খর রোদ মেখে জিনিসপত্র কিনে ঠকে যাওয়ার কথা। কি অপূর্ব লাগে যখন দেখি রাস্তার দুপাশে সেজে উঠেছে পশরা, ঘর সংসারের টুকিটাকি। তখন মনে হয় কি সুন্দর এই বেঁচে থাকা, এই মেলামাইনের বাসনগুলো, হলুদ রঙের গামলাটি, কমদামে বিক্রি হওয়া কড়কড়ে তাঁতের শাড়ি, তার চাইতেও মধুর যে বধূটি উবু হয়ে বসে টাকা বের করছে ছোট্ট পার্স থেকে, পাশে দাঁড়িয়ে শিশুটি, তার জন্য কয়েকটি জামা প্যান্ট সারা বছর পরার জন্য, এইসব তুচ্ছতার নাম উষ্ণতা, একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর সরব আয়োজন।
শপিংমলে আর রাস্তায় দুজায়গাতেই থিকথিকে ভীড়, ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা আর টালমাটাল অর্থনীতির ভারত, কিন্তু এবার এই দৃশ্য নেই। আমাদের সমস্ত শক্তি, অহংকারকে চুরমার করে দিয়েছে করোনা ভাইরাস। আইসোলেশন, হোম কোয়ারেন্টিন, লক ডাউন শব্দগুলোর সঙ্গে পরিচিত হলাম এবারই। আমাদের ছেলেমেয়েরা পরিচিত হলো মহামারীর সঙ্গে। এই পরিচয় মোটেই সুখকর নয়, তবুও তারা বাধ্য হয়ে শিখে গেলো অনেককিছু। হয়তো বহুবছর পর তারা বলবে এক চৈত্রদিনে মানুষ ঘরবন্দী হয়েছিল সুস্থ থাকার আশায়। এই লেখাটি লিখতে লিখতে জানি না সংক্রমন বেড়ে যাবে কতো হাজার হাজার মানুষের মধ্যে আর যদি গ্রাফটি স্থির হয়ে যায় এক জায়গায়, নাহ্ এই মুহূর্তে পৃথিবী নামক গ্রহের কেউ নিশ্চিত বলে দিতে পারছেন না আগামী কয়েকদিনের ভবিষ্যৎ কি। পৃথিবীর বহু দেশের ঘর বন্দী মানুষদের অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও পোস্ট করছেন, আমরা জুড়ে আছি সারা পৃথিবীর মানুষের সঙ্গে, যেখানে বলা হচ্ছে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন, তা মানুষকে নিয়ে আসছে মানসিক দিয়ে আরো কাছাকাছি। ভাইরাস থেকে বেরিয়ে আসি একটু। ভাবতে থাকি গতবছর বা তারোও আগের দিনগুলোর কথা।
ফিরে আসি গ্রামে পাহাড়ে, শহরের পথে। পাহাড় রিক্ত হয়েছে। গাছে নতুন পাতা উঠেছে। পলাশ ফুটে আছে। শহরের রাস্তাতেও মাঝে মাঝেই কৃষ্ণচুড়া, রাধাচূড়া গাছ,
0 মন্তব্য(গুলি):