উৎস থেকে উৎসে

১:৩৯ PM চিরশ্রী দেবনাথ 0 Comments

উৎস থেকে  উৎসে

চিত্র...

রাশি রাশি ভারা ভারা
ধান কাটা হল সারা  ( সোনার তরী )

চিত্রকল্প ....

আমার ছুটি চারদিকে ধূ ধূ করছে
ধান কেটে নেওয়া ক্ষেতের মতো   (পত্রপুট) 

কবি এভাবে সহজ করেই ভেবেছিলেন। দুটোই সরল। কবি কিন্তু সরল ছিলেন না। কোন লেখকই সরল নন।

হৃদয়ে তখনো শূন্যতা ছিল, পরে আরো অসীম শূন্যতা। 

প্রথমটির রচনাকাল আঠারশো বিরানব্বই। দ্বিতীয়টি অনেকদিনের ব্যবধানে । রবীন্দ্রনাথ বার বার শূন্যতর হয়েছেন। আর পূর্ণতর সৃষ্টি হয়েছে। প্রত্যেকটি স্পর্শ সোনার ধান।

কিছুদিন পর পর এক একজন কবি আসেন। সবার হৃদয়েই একই ধারা প্রবাহিত হয়। উৎসও হয়তো এক থাকে। 
আর বহুমূূল্য  পালক ছড়িয়ে দেন আমাদের ছায়াতটে।

একসময় মনে হয়েছে এভাবেই বলা শ্রেষ্ঠতর। তারপর কয়েকশত দিন পর মনে হয়েছে, আরো কত দ্বন্দ্ব আছে, থাক না আরো রহস্য উপচার। এতো সহজে কেন পুুুজো শেষ হবে। 

"অলস মাছির শব্দে ভ 'রে থাকে সকালের বিষণ্ণ সময়
পৃথিবীরে মায়াবীর নদীর পারের দেশ ব'লে মনে হয়। "

         অবসরের গান,     ' ধূসর পান্ডুলিপি ', জীবনানন্দ 

"কেন এখন তারা যেই দেশে যাবে তাকে রাঙা নদী বলে ;
সেইখানে ধোপা আর গাধা এসে জলে
মুখ দেখে পরস্পরের পিঠে চড়ে জাদুবলে। "

             লঘু মুহূর্ত, 'সাতটি তারার তিমির ' 

আমার এই মুহূর্তে প্রথম উপমাটিকেই আপন মনে হচ্ছে বেশি, হয়তো আরো জটিল যখন হবো  তখন দ্বিতীয়টিকে ধারণ করবো। 

প্রতিভাদের এইসব সূক্ষ্ম উত্তরণ দেখে মুগ্ধ থেকে কেবল মুগ্ধতর হই।

 মনে হয় কবিতার মতো এতো অপূর্ব সুন্দরী আর কেউ নেই, কেহ নেই, যে শ্রাবণের প্লাবনে বসন্তআহৃত স্বপ্নের দিকচিহ্ন গুলোর সরল দিকভ্রান্ত পংক্তি জমা করে যায়।

"আমি যেন বলি আর তুমি যেন শোনো
জীবনে জীবনে যার শেষ নাই কোনো ..."

         .....  অমিয় চক্রবর্তী

"কে তোমার কথা শোনে? তুমিও বা শোনো কার কথা!
তোমার আমার মধ্যে দু মহাদেশের নীরবতা। "
                   .....  শঙ্খ ঘোষ

এসব লাইনগুলো  থেকে যায় শুধু, একটু অদল বদল হয়ে বার বার কবিতায় আসে।

পৃথিবীর উঠোনে কত কাল ধরে একই উৎসের কাছে নিজের হাত পা সেঁকে গরম করে নিচ্ছে আগে আসা, পরে আসা  কবিদের দল।

0 মন্তব্য(গুলি):